সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ: আইইবি ও বিইএস এর যৌথ সেমিনারে করণীয় নির্ধারণে জোর

সাম্প্রতিক মিয়ানমার ও নেপালের ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য এক নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত দিয়েছেন দেশের খ্যাতিমান ভূকম্প বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলীরা। আজ শনিবার (২১ জুন ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) সদর দফতরের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় “সাম্প্রতিক মিয়ানমার ও নেপালের ভূমিকম্প: বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগ ও করণীয়” শীর্ষক একটি সেমিনার।

বাংলাদেশ আর্থকোয়াক সোসাইটি (বিইএস) ও আইইবি’র যৌথ আয়োজনে এই সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইইবি’র প্রেসিডেন্ট ও রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম (রিজু)। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইইবি’র সম্মানী সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. সাব্বির মোস্তফা খান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব রেজওয়ানুর রহমান।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিইএস-এর কনভেনর ও বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. তাহমিদ এম. আল-হুসাইনী। সঞ্চালনায় ছিলেন আইইবি কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আলম উজ্জ্বল।

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন দেশ-বিদেশের ভূমিকম্প ও অবকাঠামো বিশেষজ্ঞরা। প্রফেসর পেনাং ওয়ারনিচাই (এআইটি, থাইল্যান্ড) ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় দুর্বল নকশার কারণে ভবনের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরেন। বুয়েটের অধ্যাপক ড. রাকিব আহসান বলেন, “দেশে এখনো স্ট্রাকচারাল কোড বাস্তবায়ন দুর্বল এবং নির্মাণশৈলীতে ত্রুটি রয়েছে।” অন্যদিকে অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশের মাটির গঠন ও লিকুইফ্যাকশনের সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, “নিরাপদ ফাউন্ডেশন ডিজাইনের দিকে এখনই নজর না দিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি আসতে পারে।”

সেমিনারের এক পর্যায়ে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স এবং ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপকগণসহ সংশ্লিষ্ট খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বুয়েটের অধ্যাপক এম এ আনসারী বলেন, “ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবেলায় পূর্বপ্রস্তুতির বিকল্প নেই।”

সবার অভিমত ছিল, শুধুমাত্র নকশা ও নির্মাণের ভুলের কারণেই বড় দুর্যোগ সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন, প্রশাসনিক আন্তরিকতা এবং সর্বোপরি জনসচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

আয়োজকরা জানান, এই ধরনের সেমিনার সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভূমিকম্প সহনীয় অবকাঠামো নির্মাণে দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন আইইবি সদর দফতর ও ঢাকা কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের প্রতিনিধি, ইয়াং ইঞ্জিনিয়ার্স চ্যাপ্টার ও বাংলাদেশ আর্থকোয়াক সোসাইটির সদস্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *