সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি ও রনির স্ত্রী, মেঘনা ব্যাংক পিএলসির সাবেক পরিচালক ইমরানা জামান চৌধুরীর নামে থাকা মেঘনা ব্যাংকের প্রায় সাড়ে চার কোটি শেয়ার জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
অবৈধ অর্থে শেয়ার কেনার প্রমাণ পাওয়ায় আদালতের নির্দেশে এই জব্দের আদেশ কার্যকর করা হয়েছে বলে আজ বুধবার সকালে সাংবাদিকদের জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান। তিনি জানান, বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও অভিযুক্তদের নিয়ন্ত্রণাধীন কাগুজে প্রতিষ্ঠান স্টেডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লিমিটেড–এর নামে মোট ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ২০০ শেয়ার কেনা হয়েছিল। তখন এসব শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। পরবর্তী সময়ে স্টক ডিভিডেন্ড যোগ হয়ে শেয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫৫। সিআইডির প্রাথমিক তদন্ত বলছে, দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, জালিয়াতি ও সংঘবদ্ধ অপরাধের মাধ্যমে অভিযুক্তরা বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করে আসছিলেন। সেই অর্থের কিছু অংশ বিদেশে পাচার করা হয়; পরে তা দেশে এনে বৈধ সম্পদে রূপান্তরের চেষ্টা করা হয়।
তদন্তে আরও পাওয়া যায়, ২০২২ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিঙ্গাপুর ও দুবাই থেকে ২ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৪৪৪ মার্কিন ডলার দেশে আনা হয়। এই অর্থ আবুল কাসেমের মাধ্যমে ইউসিবি ও এনআরবিসি ব্যাংকের এফসি অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এরপর ইমরানা জামান চৌধুরী ও স্টেডফাস্ট ম্যানেজমেন্টের নামে ৬০ কোটি টাকা জমা করে কমিউনিটি ব্যাংকের একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকেই প্রায় ৫৯.৯৫ কোটি টাকা মেঘনা ব্যাংকের শেয়ার কেনায় ব্যবহার হয়।
সিআইডি জানায়, স্টেডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে উৎপল পাল ও পরিচালক হিসেবে নাসিম উদ্দিন মোহাম্মদ আদিলের নাম পাওয়া গেছে। দুজনই আরামিট গ্রুপের কর্মচারী এবং জাবেদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
সিআইডির আবেদনের পর ১৮ নভেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এসব শেয়ার জব্দের নির্দেশ দেন।
ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের তত্ত্বাবধানে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। সিআইডি জানায়, অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের শনাক্ত করা ও আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে।
আরএস
No comments yet. Be the first to comment!