বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার কৃষকরা আখ চাষে ঝুঁকছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও লাভের আশায়। ফুলতলা গ্রামের আলী আকবর শেখ বলেন, এক দশক ধরে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। ধান চাষের পাশাপাশি গত বছর আখ চাষ করেছিলেন, কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে এক বিঘা জমির আখ নষ্ট হয়ে লোকসান হয়েছে ৬০ হাজার টাকা।
তবুও আলী আকবর থেমে যাননি। এবার ১০ কাঠা জমিতে আখ চাষ করে চলতি মৌসুমে ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ করেছেন। তিনি বলেন, “ধারদেনা করে চাষ করি। গত বছরের লোকসানের ঋণ শোধ করতে হবে। আমাদের চার সদস্যের পরিবার কীভাবে চলবে, সেই চিন্তায় আছি। কৃষি অফিস থেকে সামান্য সহযোগিতাও পাই না।”
ফুলতলার আরেক চাষি ফিরোজ আহমেদ বলেন, আখ চাষে প্রচুর খরচ হয়। সার, ওষুধ দিতে হয় একাধিকবার। দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আমাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই। তবে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে, প্রতি হাটে বাজার জমে ওঠে।
কচুয়া উপজেলার বাধাল বাজারে ভোরের আলো ফুটতেই আখের হাকডাকে মুখরতা দেখা যায়। জেলা ও আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আখ ভ্যান, পিকআপ ও ট্রাকে আনা হয়। বাজার সমিতি জানায়, প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার আখ বিক্রি হয়। পাইকারদের মাধ্যমে এ আখ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, প্রতি হাটে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার আখ বিক্রি হয়। পাইকাররা বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে আসেন। বাজারে নিরাপত্তা ও সেবা ভালো হওয়ায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাবেচা করেন। বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোতাহার হোসেন জানান, এ বছর বাগেরহাটে প্রায় ৭৫০ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১১ হাজার মেট্রিক টন। তিনি বলেন, ধান, সরিষা, সূর্যমুখী চাষিদের সরকার প্রণোদনা দেয়, কিন্তু আখ চাষিদের জন্য কোনো প্রণোদনা নেই। প্রণোদনা দিলে আখের আবাদ আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব।
আরএস
No comments yet. Be the first to comment!