কুমিল্লার মুরাদনগরে মানবপাচার ও পতিতাবৃত্তির অভিযোগে একটি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নিমাইকান্দি এলাকার জাকিরের বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এ ঘটনায় হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর আখন্দপাড়ার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার (৪০) বাদী হয়ে মোট ৮ জনকে আসামি করে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন। তবে মামলার প্রধান দুই আসামি লুনা আক্তার (৩৫) ও তার স্বামী বিল্লাল হোসেন (৪২) অভিযানের আগেই কৌশলে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, বিল্লাল ও তার স্ত্রী লুনা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে মানবপাচার, যৌননিপীড়ন ও পতিতাবৃত্তিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। অতীতেও একই অভিযোগে তারা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু আইনি ফাঁকফোকর ও জামিন সুবিধার কারণে প্রতিবারই অল্প সময়ের মধ্যে মুক্ত হয়ে পুনরায় অপরাধ কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন: শাহ পরান (২১), নাঈম আহমেদ (১৮), রাকিব (১৮), রুমা আক্তার (১৯), সাদিয়া (১৯) ও নুরুন্নাহার (২০)।
মামলার বাদী খাদিজা আক্তার জানান, রামচন্দ্রপুর বাজারে তার মেয়ে সুমনা আক্তারের সঙ্গে শাহ পরান নামে এক যুবকের পরিচয় হয়। পরে শাহ পরান তাকে নিমাইকান্দির ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই থাকা অন্যান্য আসামিরা সুমনার কাছ থেকে স্বর্ণের চেইন, কানের দুল, আংটি ও পায়ের নূপুর ছিনিয়ে নেয়। পাশাপাশি তাকে যৌন নিপীড়নের উদ্দেশ্যে মারধর ও নির্যাতন করা হয়। তিনি সংশ্লিষ্ট সকল আসামির কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মঈন উদ্দিন জানান, "ভিকটিমের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মালামাল উদ্ধারের কাজ চলছে। পাশাপাশি মামলার প্রধান দুই আসামিকেও দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।"
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, "মানবপাচার ও পতিতা ব্যবসার অভিযোগে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। চক্রের মূল হোতা বিল্লাল ও তার স্ত্রী লুনাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।"
আরএস
No comments yet. Be the first to comment!