বিনোদন

হুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মদিন আজ

আপডেট: নভে ১৩, ২০২৫ : ০৬:১৮ এএম
হুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মদিন আজ

বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক অনন্য নাম হুমায়ূন আহমেদ। আজ ১৩ নভেম্বর এই কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতার ৭৭তম জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের এই দিনে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ৬৩ বছরের বর্ণিল জীবন শেষে ২০১২ সালে তিনি পাড়ি জমান না–ফেরার দেশে। কিন্তু তাঁর সৃষ্টির বিশাল জগৎ আজও বেঁচে আছে এক উজ্জ্বল ধ্রুবতারার মতো।

বাংলা সাহিত্যে তাঁকে বলা হয় “নন্দিত কথাসাহিত্যিক”। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়েই সাহিত্যাঙ্গনে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেন তিনি। এরপর তিন শতাধিক গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে তিনি অর্জন করেন জনপ্রিয়তা ও অমরত্ব। তাঁর গল্পে যেমন ছিল জীবনের সহজ সরল রূপ, তেমনি ছিল মায়া, কৌতুক আর গভীর মানবিকতা।

সাহিত্যের পাশাপাশি নাটক ও চলচ্চিত্রে অবদান রেখে হুমায়ূন আহমেদ হয়ে ওঠেন সর্বজনপ্রিয় স্রষ্টা। তাঁর হাতে সৃষ্টি হয়েছে কালজয়ী চরিত্র— বাকের ভাই, মিসির আলী ও হিমু—যারা আজও পাঠক-দর্শকের হৃদয়ে জীবন্ত। ১৯৯৪ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি ‘আগুনের পরশমণি’ দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আটটি বিভাগে পুরস্কৃত হয়। পরবর্তীতে তিনি নির্মাণ করেন ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘আমার আছে জল’ ও শেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’—যেগুলোও দর্শক ও সমালোচকদের সমানভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সাহিত্য, নাটক ও চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ হুমায়ূন আহমেদ লাভ করেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং আটবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দু’বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য জীবন ছিল ১৯৭৩ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত। এই সংসারে তাঁর চার সন্তান— অভিনেত্রী শীলা আহমেদ, নোভা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ ও নির্মাতা নুহাশ হুমায়ূন। ২০০৫ সালে তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওনকে। এই সংসারে তাঁর দুই পুত্রসন্তান— নিশাত হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন। হুমায়ূন আহমেদ চলে গেছেন এক যুগেরও বেশি আগে, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি ও স্মৃতি আজও বাঙালির আবেগ, ভালোবাসা ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।


আরএস

০ মন্তব্য


No comments yet. Be the first to comment!