রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। সোমবার এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানায়, চলতি বছরের শেষের আগেই প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভারত সফরের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তারা আশা করছে, সফরটি হবে গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ। ক্রেমলিনের তথ্য অনুযায়ী, পুতিন আগামী ডিসেম্বর মাসে ভারত সফরে যাবেন।
তিনি সর্বশেষ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত সফর করেছিলেন। সেই সফরের কয়েক মাস পর, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ইউক্রেনে রুশ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন, যা থেকে শুরু হয় চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
গত মাসে নিজেও পুতিন এই সফরের কথা উল্লেখ করে জানান, তিনি ডিসেম্বরের বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছেন। তিনি আরো বলেন, আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে ভারত-রাশিয়া বাণিজ্যের চলমান ভারসাম্যহীনতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘বছরের শেষের দিকে নির্ধারিত পুতিনের ভারত সফরের জন্য আমরা সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা আশা করছি, এটি হবে একটি অর্থবহ ও ফলপ্রসূ সফর।”’তবে সফরের বিস্তারিত কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি কিছু জানাননি।
পেসকভের এই মন্তব্য আসে ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস-এর একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া ও ভারত শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা এবং যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিক্স খাতে দক্ষ জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে একটি ‘লেবার মোবিলিটি’ চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আহ্বান জানিয়েছেন যেনো, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে। রাশিয়ান তেলের অন্যতম বৃহৎ ক্রেতা দেশ হলো ভারত।
মস্কো ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ। ভারত রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল ক্রেতা হলেও, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে পড়েছে।গত অক্টোবরের শেষে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রধান দুটি তেল কম্পানি রসনেফট ও লুকওয়েল-এর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে দাবি করেছিলেন, ভারত রাশিয়ার তেল কিনে ‘ইউক্রেন যুদ্ধকে অর্থ জোগাচ্ছে।’
তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা এই অভিযোগকে গুরুত্ব দেননি। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেরাও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করেনি। নয়াদিল্লির অবস্থান স্পষ্ট— ভারতের জ্বালানি নীতি সম্পূর্ণভাবে ‘জাতীয় স্বার্থ’নির্ভর, এবং দেশটি কোনো একতরফা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলে না।
সূত্র : রয়টার্স, আরটি
আরএস
No comments yet. Be the first to comment!