বাংলাদেশে শ্রম অধিকার সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর তিনটি কনভেনশন বাস্তবায়নের পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে গণসাক্ষরতা অভিযানের আয়োজনে এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় এ সভা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আগামী ২০ নভেম্বর আইএলও’র সাধারণ সভায় আমরা এই বিষয়টি উপস্থাপন করব। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে বাংলাদেশ যেন আরও শক্ত অবস্থান নিতে পারে, সে লক্ষ্যেই আমাদের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি শ্রম আইন পেয়েছি, যা দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। তবে শুধু আইন করলেই হবে না, সেটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপির কারণে শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের পাওনা আদায়ে সরকার ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।”
উপদেষ্টা বলেন, “শ্রম সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষায় মালিক, শ্রমিক ও নাগরিক সমাজ—সব পক্ষের দায়িত্ব রয়েছে। এনজিওগুলো শ্রমিক ও শ্রমিকনেতাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে, কারণ প্রশিক্ষণ ছাড়া নেতৃত্ব দিলে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আইএলও’র তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন শ্রমিকদের সুরক্ষায় সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলও’র ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশের মর্যাদা পেয়েছে।”
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা আইএলও’র ১৫৫, ১৮৭ ও ১৯০ নম্বর কনভেনশন অনুস্বাক্ষরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা বলেন, এই কনভেনশনগুলোর বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত আইনি ভিত্তি শক্তিশালী করতে হবে, যাতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত হয়।
সভায় বক্তব্য দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও ক্যাব-এর চেয়ারপারসন এএইচএম সফিকুজ্জামান, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বিলস-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, নারী সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, আইএলও-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার নিরান রামজুথান, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর আশিষ দামলে, প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তাসলিমা আখতার।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে গৃহকর্মী, শ্রমিক সংগঠন, গবেষক, উন্নয়নকর্মী, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও গণমাধ্যমকর্মীসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্ধশতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
No comments yet. Be the first to comment!