দেশের স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দরগুলোর দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার “ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি ২০২৫” নামে একটি জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই এ কৌশলপত্রের চূড়ান্তকরণ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান। জাপান সরকার ও জাইকার সহায়তায় প্রণীতব্য এ কৌশলপত্রের চূড়ান্তকরণের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজির খসড়া ইতিমধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, এই বছরের মধ্যেই এটি অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত হবে এবং আগামী জানুয়ারি থেকেই কার্যকর করা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বন্দরগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও স্বাধীনতার পর গত ৫৪ বছরে কোনো সমন্বিত বন্দর ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র প্রণীত হয়নি। প্রতিটি বন্দর স্বতন্ত্রভাবে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে আসছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক, দক্ষ ও বিনিয়োগবান্ধব বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতেই বর্তমান সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে।
ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিশ্বের অনেক বন্দর এখন ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে, যার ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। আমাদের লক্ষ্যও সেই পথেই এগিয়ে যাওয়া। ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে একটি সমন্বিত ও আধুনিক বন্দর কাঠামো গড়ে তোলা হবে।’
তিনি জানান, এই কৌশলপত্র বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো’ চালু করা হবে, যেখানে ব্যবসায়ীরা এক প্ল্যাটফর্মে দ্রুত ও হয়রানিমুক্ত সেবা পাবেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী, এনডিসি বলেন, ‘মাননীয় উপদেষ্টার দিকনির্দেশনায় প্রণীত এ কৌশলপত্র আধুনিক বন্দর ব্যবস্থাপনায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। এটি ভবিষ্যৎ মেরিটাইম সেক্টরের জন্য এক অনবদ্য দলিল।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান ফোকাল পারসন হিসেবে বক্তব্য দেন। তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়ন হলে দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।’
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে দেশের সমুদ্রবন্দর, অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোর কার্যক্রমকে সমন্বিতভাবে যুক্ত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারের আশা, এ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরে নতুন যুগের সূচনা ঘটবে।
No comments yet. Be the first to comment!