বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধনের প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশ–২০২৫ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ট্রাভেল, হজ ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের অভিযোগ, নতুন অধ্যাদেশ কার্যকর হলে দেশজুড়ে লাখ লাখ দক্ষ কর্মী একদিনে বেকার হয়ে পড়বে।
শনিবার রাজধানীর পল্টনে এক হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আটাবের সাবেক সভাপতি এস. এন. মঞ্জুর মোর্শেদ মাহবুব বলেন, অধ্যাদেশটি বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রায় ৬ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি, ১ হাজার ৪০০ হজ এজেন্সি এবং ২ হাজার ৭০০ রিক্রুটিং এজেন্সি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আয়াটায় যুক্ত হওয়ার বাধ্যবাধকতা মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, নতুন বিধানে সব ট্রাভেল এজেন্সিকে আয়াটা টিকিট সেলিং প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে হবে। কিন্তু দেশে নিবন্ধিত ৬ হাজার ট্রাভেল এজেন্সির মধ্যে আয়াটায় যুক্ত রয়েছে মাত্র এক হাজার।
তিনি বলেন, “অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার দিনই বাকি এজেন্সিগুলোর ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাঁদের ওপর নির্ভরশীল কর্মীরাও বেকার হবে।”
ছোট উদ্যোক্তাদের ওপর ‘অযৌক্তিক চাপ’ নতুন অধ্যাদেশে পারিবারিক তথ্য জমা বাধ্যতামূলক করা, সিআইবি অনুমোদন, অফলাইনে ১০ লাখ ও অনলাইনে ১ কোটি টাকা ব্যাংক জামানত, লাইসেন্স নবায়নে বার্ষিক আর্থিক বিবরণীসহ বিভিন্ন কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, এসব বিধান ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য গুরুতর আর্থিক চাপ তৈরি করবে এবং পর্যটন শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।
বি-টু-বি ব্যবসা বন্ধের আশঙ্কা মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, বিশ্বে প্রচলিত ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বি-টু-বি ব্যবসা (এজেন্ট টু এজেন্ট) এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশে বন্ধ হয়ে যাবে। এতে সব এজেন্সিকে আয়াটা নিবন্ধন নিতে বাধ্য হতে হবে, যার খরচ অন্তত ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া বিমানের টিকিটিংয়ের জন্য আরও ২২ লাখ টাকা জামানত জমা দিতে হবে। তিনি বলেন, “৯০ শতাংশ এজেন্সির পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। ফলে অধিকাংশই ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হবে।”
অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবি সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির (ওটিএ) মালিকরা শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে গেলেও মন্ত্রণালয় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
তাঁদের দাবি, ওটিএ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে সরকার এখন সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে চাইছে।
যাঁরা বক্তব্য রাখেন সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— হাব সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ার, টোয়াব সভাপতি রাফিউজ্জামান, বায়রার সাবেক মহাসচিব কাজী মফিজুর রহমান, টিডাব-এর সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাবিব আলী, হাব–আটাব নেতা রুহুল আমিন মিন্টু, আটাব সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক গোফরান চৌধুরী, আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্যজোটের মুখপাত্র সবুজ মুন্সী ও আটাব সংস্কার পরিষদের মুখপাত্র মো. জুমান চৌধুরী। বক্তারা নতুন অধ্যাদেশে প্রস্তাবিত ধারা–বিধিগুলো অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আরএস
No comments yet. Be the first to comment!