ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘বিচারসংস্কার ও নির্বাচনের যে পথরেখা নির্ধারিত হয়েছে, তা আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সফল করতে হবে।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দলটির রাজনৈতিক দল হিসেবে এক দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে কেউ যেনো কোনো বিভাজন তৈরি করতে না পারে, সেদিকে সবার সতর্ক থাকতে হবে। আমরা এখনো গভীর জাতীয় সংকটের মধ্যে আছি। অর্থনীতি দুরবস্থায়, রাষ্ট্রব্যবস্থা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাই মৌলিক সংস্কার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সব হত্যাকাণ্ডের বিচার জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একইসঙ্গে আয়োজন করতে হবে—যা হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যৌথ প্রক্রিয়া। এই নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হওয়া উচিত।’
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব উল্লেখ করে সাকি বলেন, ‘যে রাষ্ট্র ন্যায়বিচার দিতে পারে না, সেই রাষ্ট্র টিকে থাকতে পারে না। গুম–খুন–লুটপাটসহ সব অপরাধে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ গণঅভ্যুত্থানে জনগণের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ছাত্র, শ্রমিক, জনতা—এই দেশের মেহনতি মানুষ রাষ্ট্রে ন্যায্য হিস্যা চায়। অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রিক পরিকল্পনা সেই অনুযায়ী প্রণয়ন করতে হবে। ফ্যাসিস্টরা ঘৃণা ও বিভাজন ছড়িয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চেয়েছে, কিন্তু জনগণ সেই জবরদস্তিকে না বলে দিয়েছে।’
বিদেশনীতি প্রসঙ্গে সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন মর্যাদা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। আমরা সব দেশের সঙ্গে জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক চাই, কারও কাছে পরাধীন হতে চাই না। শেখ হাসিনাকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় কর্তৃত্ববাদকেও না বলে দিয়েছে।’ সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ২০০২ সালে জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি গড়ার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে গণসংহতি আন্দোলন এবং ২০১৫ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের গণভোট পদ্ধতি স্পষ্ট নয়। প্রতিটি ধারার ব্যাখ্যা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের।’
সমাবেশ শেষে মাথাল প্রতীক হাতে দলীয় নেতাকর্মীরা শাহবাগ থেকে বাংলামোটর–মগবাজার প্রদক্ষিণ করে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলু, মনির উদ্দীন পাপ্পু, হাসান মারুফ রুমী, বাচ্চু ভুইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ, দীপক কুমার রায়, তারিকুল সুজনসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা।
আরএস
No comments yet. Be the first to comment!