রাজনীতি

শেখ হাসিনার রায় সামনে রেখে সারাদেশে আতঙ্ক: ফখরুল

আপডেট: নভে ১৬, ২০২৫ : ০৫:৩০ পিএম
শেখ হাসিনার রায় সামনে রেখে সারাদেশে আতঙ্ক: ফখরুল

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ‘গণহত্যা মামলার’ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে তীব্র উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ফখরুল বলেন, ‘আগামীকাল ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে যে ট্রায়াল হয়েছে, তার রায় প্রকাশ হবে। এটা ঘিরে সারাদেশে চরম অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। একটি মহল আবারও দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে—এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে “বিভ্রান্তিকর ও অস্বাভাবিক” আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি এক ধরনের কনফিউজড অবস্থায় পড়েছে। এমন সব ঘটনা ঘটছে, যা এ দেশের মানুষ কখনো ভাবেনি। এগুলো বাংলাদেশের আত্মা নয়। দেশ এখন গভীর সংকটে। অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের নামে যারা এসেছে, তারা রাজনৈতিক কাঠামোকে একদিকে নিতে চেয়েছে; কিন্তু সেটি জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না—এখনো বলা যাচ্ছে না।’

বিএনপির অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, নির্বাচনই হলো একমাত্র উপায়, যার মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ সম্ভব। হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও এখন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে। তবে কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দাবি, নানা দাবিদাওয়া তুলে নির্বাচনকে ব্যাহত বা বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু দেশের মানুষ এখন চায় একটি নির্বাচিত সরকার, যার পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে। ফখরুল বলেন, ‘অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ; নির্বাচন ছাড়া এটি আরও খারাপের দিকে যাবে। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিও ভালো নয়। নির্বাচিত সরকার না থাকলে তা আরও অবনতি ঘটাবে।’

গণহত্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশঙ্কা উত্থাপন করে তিনি বলেন, ‘একটি মহল নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইছে। ছাত্রদের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে—তা যেন নষ্ট না হয়। গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে কেউ বাধা দিতে পারবে না—সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব দলকে বলছি—আসুন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য সামনে রেখে এগিয়ে যাই। মাওলানা ভাসানীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। সঞ্চালনায় ছিলেন কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমানসহ অন্যান্য নেতা।


আরএস

০ মন্তব্য


No comments yet. Be the first to comment!