নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (ইপিজেড) সনিক বাংলাদেশ লিমিটেডের শ্রমিক আন্দোলন থামেনি। ১১ দফা দাবিতে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছেন শ্রমিকেরা। এ অবস্থায় কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও উত্তেজনা কারখানা কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়, গত ১৬ নভেম্বর শ্রমিকদের একটি অংশ কাজে যোগ না দিয়ে মূল ফটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে অন্য শ্রমিকদের যুক্ত করে তাঁরা উৎপাদন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেন। আলোচনা করে দাবি উত্থাপনের আহ্বান জানালেও শ্রমিকরা তাতে সাড়া দেননি। ১৭ নভেম্বর মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেও তাঁরা কাজে ফিরতে অস্বীকৃতি জানান এবং উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯–এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী ১৮ নভেম্বর থেকে সনিক কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
দাবি পূরণের বদলে বন্ধ—শ্রমিকদের ক্ষোভ:- বিজ্ঞপ্তি জারির পরও মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকেরা কারখানার মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ চালিয়ে যান। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। দাবি না মেনে কারখানা বন্ধ হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিকেরা।
রহমান নামে এক শ্রমিক বলেন, “১১ দফা ন্যায্য দাবি জানিয়েছি। কিন্তু দাবি না মেনে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে—এটা খুবই দুঃখজনক। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” শ্রমিক সুলতানা বেগম বলেন, “এই কারখানার চাকরিতেই আমাদের সংসার চলে। কারখানা বন্ধ হলে পরিবার কীভাবে চলবে?”
প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের অবস্থান
উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, “সনিক কারখানা নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও খুলে দেওয়া হবে।” সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ জানান, শ্রমিকেরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ১১ দফা দাবি নিয়ে শ্রমিক আন্দোলন চলমান থাকায় সনিক বাংলাদেশ লিমিটেডের অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
আরএস
No comments yet. Be the first to comment!