রাজধানী ঢাকায় মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (ছাত্রদল) দুই নেতার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ। সোমবার গভীর রাতে গুলশানে ছাত্রদল নেতা সৌরভ এবং মঙ্গলবার সকালে মোহাম্মদপুরে সাব্বির আহমেদ নামের আরেক নেতার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের সৌরভ ছিলেন ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী, যিনি বিএনপির গুলশান অফিস থেকে বের হওয়ার পরপরই গুলশান লেকের পাশে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। পুলিশের দাবি, এটি প্রেমঘটিত কোনো বিরোধের ফলাফল হতে পারে, তবে পরিবারের সদস্যরা এটিকে “পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যা” বলে অভিযোগ করেছেন। নিহতের ভাই ও ভগ্নিপতি জানান, তারা পুলিশের কাছ থেকে ফোন পেয়ে মৃত্যুর খবর জানতে পারেন, তবে সৌরভ কেন ঢাকায় এসেছিলেন সে বিষয়ে কেউ কিছু জানতেন না।
অন্যদিকে, মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির আহমেদ-এর লাশ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে। এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজি রফিক জানান, লাশটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল এবং হাতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি; ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। ছাত্রদল নেতারা দাবি করেছেন, সাব্বিরের মৃত্যু রহস্যজনক এবং এটি কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে।
দুই ছাত্রনেতার একই দিনে হত্যাকাণ্ডে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, একের পর এক নেতাকে পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করা হচ্ছে। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, দুই ঘটনার মধ্যকার যোগসূত্র এখনো স্পষ্ট নয় এবং উভয় হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ অনুসন্ধানে পৃথক তদন্ত চলছে। এই দুই তরুণ নেতার মৃত্যুর ঘটনায় আবারও আলোচনায় এসেছে দেশের রাজনৈতিক সহিংসতা ও তরুণ নেতৃত্বের নিরাপত্তা প্রশ্ন।
No comments yet. Be the first to comment!