বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের সাবেক পেসার জাহানারা আলম সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলে নিজের প্রতি হওয়া নানা ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনেন। তিনি অভিযোগ করেন, কয়েকজন সাবেক নির্বাচক, ইনচার্জ, ম্যানেজার ও কিছু ক্রিকেটার তার সঙ্গে যৌন হয়রানিসহ নানা অনৈতিক আচরণ করেছেন। এ অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়, এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তা তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়।
দেশে ফিরে প্রথমবারের মতো বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রকাশের পরপরই বোর্ড একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন একজন বিচারক। এই কমিটি আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশ জমা দেবে। বুলবুল বলেন, “ভিডিও সাক্ষাৎকারটি দেখার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত কমিটি গঠন করি। রিপোর্টটি বিসিবিতে জমা দেওয়ার পর তা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে পাঠানো হবে, এবং সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, কমিটির সদস্যরা অভিজ্ঞ ও পেশাদার, এবং তারা শুধু জাহানারার অভিযোগই নয়, বরং এর বাইরে আরও যেসব বিষয় উঠে এসেছে, সেগুলোকেও গুরুত্বসহকারে তদন্ত করবেন। ওএসডি করা চার কর্মকর্তার বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, “ওএসডির বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। প্রয়োজনে তা কার্যকর করা হবে।”
নারী দলের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে বুলবুল বলেন, “ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মারুফা আক্তারের ইনসুইং দেখে ধারাভাষ্যকাররাও মুগ্ধ হয়েছেন। এবারের বিশ্বকাপে আমাদের দল ভাগ্য অনুকূলে থাকলে সেমিফাইনালেও যেতে পারত। কয়েকটি ম্যাচ খুব কাছাকাছি গিয়েও আমরা হেরেছি।”
নারী ক্রিকেটের উন্নয়ন নিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, “আগে জাতীয় দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়া বিশেষ কিছু ছিল না। এখন আমরা ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণ করছি, যেন প্রত্যেক জেলা ও বিভাগে ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই সমান সুযোগ পায়। এটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনারই অংশ।”
বুলবুলের মতে, এই তদন্তের মূল উদ্দেশ্য হলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, যাতে নারী ক্রিকেট আরও নিরাপদ, পেশাদার ও উন্নয়নমুখী পরিবেশে এগিয়ে যেতে পারে।
No comments yet. Be the first to comment!